মূলধনের ঘাটতি পূরণ করতে সরকারের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। তাছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সোনালী ব্যাংকের মূলধনের যে উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে তা বাস্তবভিত্তিক নয়, বরং হিসাবভিত্তিক। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান।
গত এক বছরে সোনালী ব্যাংকের সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক আগে থেকেই ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে। সে জন্য এ বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে প্রভিশন সংরক্ষণ ছাড় নেয়া হয়েছে। এ কারণেই ঘাটতির পরিবর্তে উদ্বৃত্ত দেখাচ্ছে। ঘাটতি থাকাতেই প্রতিষ্ঠানটির মালিক সরকারের কাছে নগদ টাকা, গ্যারান্টিসহ তিনটি পৃথক ফর্মের যেকোনো একটি প্রক্রিয়ায় মূলধনের জন্য অর্থ চাওয়া হয়েছে।
সরকারের কাছ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা পাওয়া গেলে মূলধনের ভিত্তি শক্তিশালী হবে জানিয়ে আতাউর রহমান প্রধান বলেন, সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি নিয়ে সবাই কথা বললেও বাস্তব অবস্থা নিয়ে কেউ কথা বলে না। সোনালী ব্যাংক এখন পর্যন্ত ১১ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে সরকারকে দিয়েছে এবং ৩৭টি সেবা বিনামূল্যে দিচ্ছে। লিমিটেড কোম্পানি করার সময় যে ঘাটতি ছিল সেটিও পর্যায়ক্রমে লাভ থেকে পূরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ব্যাংকের আমানত ১ লাখ ১২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা ছিল। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া পরিচালন মুনাফা ৪৭৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২২০ কোটি টাকা এবং খেলাপি ঋণ ১২ হাজার ২১৩ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ১০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। আর লোকসানি শাখা ছিল ৫৮টি। সেটি এখন কমে হয়েছে ৫০টি।
সোনালী ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সুভাস চন্দ্র দাস বলেন, বাস্তবভিত্তিক নয়, বরং মূলধনের হিসাবভিত্তিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যাসেল নীতি অনুসারে প্রত্যেক ব্যাংকের ১০ শতাংশ হারে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। কিন্তু যে সব ব্যাংক দেশের জিডিপিতে বড় অবদান রাখে, সেগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই সোনালী ব্যাংককে ব্যাসেল-৩ অনুসারে ১৭.৫০ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে। সেই ঘাটতি মেটাতেই টাকা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে, সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৫ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা এবং এ বছরের মার্চে সেটা ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা দাঁড়ায়। অথচ জুন মাস শেষে তাদের মূলধন ৩ কোটি ৩৫ লাখ উদ্বৃত্ত রয়েছে।
এস.এম. সজল/ব্যতিক্রম নিউজ
Leave a Reply